শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
Menu

সিরাজগঞ্জে তালাবদ্ধ ঘরে মা ও দুই ছেলের লাশ, সন্দেহ খুন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  October 1, 20223:30 pm

সিরাজগঞ্জের বেলকুচির মবুপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে মা ও দুই ছেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতরা হচ্ছেন ৩২ বছর বয়সী রওশন আরা এবং তার দুই সন্তান ৯ বছর বয়সী জিহাদ ইসলাম ও দুই বছরের মাহিদ ইসলাম। তারা খুনের শিকার বলে ধারণা করছে পুলিশ। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের মৌপুর নতুন পাড়া গ্রাম থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ফাঁকা বাড়িতে শুধু মা ও তাঁর দুই ছেলে থাকত। বিকেলে বাড়ি থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। সূতার কারখানায় কাজ করতেন রওশন আরা। পাঁচদিন ধরে কারখানায় না যাওয়ায় কারখানার মালিক রওশনের বড় বোনকে ফোন করেন। তিনি রওশনের বাড়ি গিয়ে তালাবদ্ধ ঘর দেখে স্থানীয়দের নিয়ে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেই দেখতে পান বোনসহ ভাগিনাদের মরদেহ। রওশনের বড় বোন লিলি খাতুন বলেন, আমার বড় বোন রওশন পাশের গ্রামে তাঁত কারখানায় সুতা মরাইয়ের কাজ করতেন। তিন দিন ধরে তিনি কাজে না যাওয়ায় মহাজন সকালে আমাকে ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে বলেন। তখন আমি বোনের বাসায় যাই। তিনি আরও বলেন, আমি বিকেলে বোনের বাড়িতে এসে দেখি ঘরে তালা। খোলা থাকা জানালা দিয়ে উঁকি দিলে দুর্গন্ধ ভেসে আসে। পরে পাশের কয়েকজনকে ডেকে এনে তালা ভেঙে দেখি আমার বোন আর ভাগনেদের লাশ পড়ে আছে। লিলি বলেন, আমার বোনের জামাই খালি বিয়া করে। সে এখানে মাঝে মাঝে আসে, সে জেলে ছিলো। কবে বের হয়েছে জানি না। তবে সবাই বলছে, সে কয়েক দিন আগে এখানে এসেছিল। দুলাভাই মনে হয় লোকজন নিয়ে ওদেরকে মেরে ফেলেছে? আমি এই হত্যার বিচার চাই। স্থানীয় লোকজন ও রওশনের স্বজনদেরও দাবি, সুলতান আলী তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়েছে। নিহতের বড় ভাই জানান, এই হত্যাকান্ডের কোনো কারণ তারা কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেন না। তারও সন্দেহ রওশনের স্বামীর দিকেই। স্থানীয় জাহিদুল ইসলাম বলেন, মবুপুর গ্রামের সুলতান আলী বিয়েতে আসক্ত। কিছুদিন আগে তিনি জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। তিন দিন আগেও তাকে আমরা দেখেছি। আমাদের ধারণা, সুলতান লোকজন নিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।জাহিদুল জানান, সুলতানের বাড়ি ফাঁকা জায়গায় হওয়ায় মানুষের চলাফেরা কম। রওশন আরার বোন লিলি খাতুন ঐ বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। তখন ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। পরে স্থানীয়দের ডেকে এনে তালা ভেঙে ভেতরে তার বোন ও দুই ভাগনের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধারে তৎপর হয়। বেলকুচি থানার ওসি তাজমিলুর রহমান বলেন, একটি ফাঁকা বাড়িতে শুধু মা আর তার দুই ছেলেই থাকতো বলে এখানে এসে জেনেছি। খবর পেয়ে আমরা এসে দেখি ঘরের মধ্যে লাশগুলো পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ৪-৫ দিন আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, কয়েকদিন আগের ঘটনা হলেও শনিবারই জানতে পেরেছেন তারা। আর সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। দ্রুততম সময়ে হত্যার কারন উদঘাটন করা হবে বলে আশ্বাসও দেন তিনি।