বিশ্ব অর্থনীতি ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সারের দাম বাড়াতে সরকার বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। মন্ত্রী বলেন, সারের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকের ওপর চাপ পড়লেও উৎপাদন কমবে না। বীজ বা অন্য কোনোভাবে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি জানান, সারের দাম বাড়ানোর পর এখনও সরকারকে অনেক টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। বোরো ধানের আগে সারের চাহিদা বেশি থাকে। পরে সারের চাহিদা কমে আসলে দামে খুব সমস্যা হবে না। সোমবার (১০ এপ্রিল) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং শাখা থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সারের দাম বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কৃষক ও ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম কার্যকর করা হয় সেদিন থেকেই। দাম বাড়ায় এখন থেকে কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া ও টিএসপির দাম ২২ টাকা থেকে ২৭ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকা থেকে বেড়ে ২১ টাকা, এমওপি সারের দাম ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে ৫ টাকা বেড়ে ডিলার পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া ও টিএসপির দাম ২৫ টাকা, ডিএপির দাম ১৯ টাকা এবং প্রতি কেজি এমওপির দাম ১৮ টাকা হয়েছে। যা আগে ছিল ইউরিয়া ও টিএসপি ২০ টাকা, ডিএপি ১৪ টাকা এবং এমওপি ১৩ টাকা। মন্ত্রণালয় জানায়, গত তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় চার গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল সাত হাজার ৪২০ কোটি টাকা, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রয়োজন হবে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। সারে ২০০৮-০৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে বলেও জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়। তিন এপ্রিলের বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, ২৩-২৪ অর্থবছরে ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপিসহ বিভিন্ন ধরনের সারের চাহিদা প্রায় ৬৮ লাখ মেট্রিক টন। যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশে সার নিয়ে কোন সঙ্কট সৃষ্টি হতে দেয়া হবে না। সারের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই, দাম বাড়বে না।
সারের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক
প্রকাশ : April 11, 202310:10 am
