প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মহামতি গৌতম বুদ্ধ আজীবন মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। বুদ্ধ সত্য ও সুন্দরের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবজগতকে আলোকিত করতে কাজ করে গেছেন। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার জীবনাদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন। আজ রবিবার (১৫ মে) বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, মৃত্যু ও বোধিজ্ঞান লাভের স্মৃতিবিজড়িত শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখণ্ডে সব ধর্মের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘ্নে পালন করে আসছেন। বাংলাদেশের সংবিধানে সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমাদের সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত আনন্দ ও প্রীতির মাধ্যমে উদযাপন করে থাকে। আগামীতে বাংলাদেশের সম্প্রীতির চর্চা ও বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করতে আমাদের সবাইকে উদার হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা সম্প্রীতির বাতাবরণে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চাই। বুদ্ধ পূর্ণিমায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মানুষের জীবনে সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি ও মঙ্গল বয়ে আনুক, এ কামনা করেন তিনি।
শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সাম্যের বাণী প্রচার করেছেন বুদ্ধ: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। রবিবার (১৫ মে) বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বাণীতে বলেন, বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। মহামতি বুদ্ধ ছিলেন জীবের মঙ্গল কামনায় সত্যসন্ধ। পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালান। বুদ্ধের চেতনায় ছিল দুঃখ জয়ের মাধ্যমে জীবের মুক্তি কামনা। তিনি মানব জীবনে দুঃখ ও দুঃখের কারণ এবং তা নিবারণের উপায় সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন, যা ‘চতুরার্য সত্য’ নামে পরিচিত। চতুরার্য সত্য তত্ত্বে তিনি জীবনে দুঃখ, দুঃখের উৎপত্তি, দুঃখ ভোগের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির পথ দেখান। তার মতে ‘নির্বাণ’ লাভের মাধ্যমে মানুষ জীবনের পরমার্থ অর্জন এবং সব ধরনের দুঃখ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। এজন্য তিনি অষ্টমার্গ তথা প্রজ্ঞা, শীল ও সমাধি চর্চার উপদেশ দেন। তিনি স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সব জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেন। ‘সব্বে সত্তা সুখীতা হোন্তু’ পৃথিবীর সব প্রাণি সুখী হোক, এ ছিল বুদ্ধের শাশ্বত দর্শন। তিনি বলেন, মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। ‘অহিংসা পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন করবেন। শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি ও সমৃদ্ধি।