শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
Menu

শিশুদের জ্বর-সর্দি, অথচ করোনা পরীক্ষা করাননি? বড় বিপদ ডেকে আনছেন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  January 12, 20225:11 pm

Importance Of Covid 19 Test In Children : করোনা আক্রান্ত বাড়ির সকলে। পরিবারের ছোটটিরও হাঁচি-কাশি । হালকা জ্বরও। আবার বাচ্চার আরটিপিসিআর করাব কেন, সেরেই তে যাবে, এই ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন ? বড় ভুল করছেন। সমস্যায় পড়তে পারেন ভবিষ্যতে। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায় ও ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার।

  • ভবিষ্যতে অন্য কোনও অসুখ হলে
    ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার জানালেন , শিশু যদি ভবিষ্যতে অন্য কোনও অসুখে পড়ে, সেক্ষেত্রে সঠিক পথে চিকিৎসার জন্য জেনে রাখা প্রয়োজন শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছিল কি না। যদি কোভিড-হিস্ট্রি থাকে, তাহলে চিকিৎসকরা প্রথম থেকে সেইদিকে নজর রেখেই চিকিৎসা করবেন। অনেক চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটা জানা খুবই প্রয়োজন।
  • পরিসংখ্যান
     ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার জানালেন ,  কোনও ভ্যারিয়েন্টের গতিপ্রকৃতি বুঝতে গেলে, আক্রান্তের সঠিক পরিসংখ্যান থাকা খুবই জরুরি। তার উপর নির্ভর করে অনেক মেডিক্যাল রিসার্চ, যা পরবর্তীতে সাধারণ মানুষেরই কাজে আসে। আপনার শিশু করোনা আক্রান্ত হল, অথচ নথিভুক্তই হল না তার নাম, এই চিন্তা ভাবনা সকলে করলে কিন্তু পরিসংখ্যানে বড় একটা ফাঁক তৈরি হবে।
  • মাল্টি সিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম ইন চাইল্ড ( Multi System Inflammatory Syndrome)

    ডা. জয়দেব রায় ও ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার উভয়েই জানালেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর রীতিমতো ভাবিয়েছিল শিশুদের এই অসুখ। উপসর্গ অনেকটা কাওয়াসাকি জ্বরের মতো। অসুস্থতা একটু বেশি দূর গড়িয়ে গেলে দেখা যায় এই অসুখ ক্ষতি করছে হৃদপিন্ড ও ফুসফুস, কিডনি , মস্তিষ্ক , শ্বাসনালী,  খাদ্যনালী , চোখ ত্বক, ইত্যাদিরও। কাড়তে পারে জীবনও। একেবারে সদ্যোজাত থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছানো ছেলে-মেয়েদের মধ্যেই এই রোগ দানা বাঁধতে দেখা গিয়েছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবন কেড়ে নিয়েছে এই অসুখ। এক্ষেত্রেও জেনে রাখতে হবে, শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছিল কি না। অনেকক্ষেত্রেই চিকিৎসকরা ট্রিটমেন্ট করতে গিয়ে দেখেছেন, শিশুর কোভিড হয়েছিল , জানেনই না অভিভাবকরা। সাধারণত দেখা গিয়েছিল কোভিড থেকে সেরে ওঠার দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা । তাই করোনা আক্রান্ত হয়েছে শিশু, তা জানা থাকলে শিশুর উপ বিশেষ লক্ষ রাখা যাবে। অন্যরকম লক্ষণ দেখলেই নিয়ে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

  • ভ্যাকসিনেশনের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হতে পারে
    ডা. জয়দেব রায় ও ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার উভয়েই জানালেন, এখন ১৫ থেকে ১৮ বছরের ছেলেমেয়েরা ভ্যাকসিন নিতে পারছে। যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়, অথচ না-জানে সে কোভিড আক্রান্ত, তাহলে তো সে আবার ভ্যাকসিনও নিয়ে ফেলবে। সেক্ষেত্রে কাজই করবে না করোনার ভ্যাকসিন।
  • শিশুদের ভ্যাকসিনেশনে সমস্যা
    ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার জানালেন, ছোট শিশুদের সারা বছরই রুটিন ভ্যাকসিনেশন চলে। কিন্তু কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পরপরই ভ্যাকসিন নেওয়া যায় না। কোনও কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ২ সপ্তাহ, কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ৪ সপ্তাহ বিরতি রাখতেই হয়। নইলে ভ্যাকসিন কাজ করে না বা সমস্যা তৈরি করে। তাই ছোটটি করোনা আক্রান্ত কি না তা জানা আবশ্যক। বাড়িতে অন্যান্যদের কোভিড হলে বা, উপসর্গ থাকলে বাচ্চার করোনা পরীক্ষা করাতেই হবে।
  • কোনও শিশুর ক্ষেত্রে কোভিডের প্রতিক্রিয়া অন্যরকম হতে পারে
    ওমিক্রন আক্রান্ত হলে উপসর্গ মৃদু হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। কোনও শিশুর যদি অন্য কোনও বড় অসুখ থাকে, যেমন হার্টের অসুখ, স্নায়ুর অসুখ, তাহলে কিন্তু কোভিডের প্রভাব মৃদু নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে জানা আবশ্যক শিশু করোনা আক্রান্ত কি না। তাই শিশুর কোভিড উপসর্গ থাকলে, বা বাড়ির কেউ আক্রান্ত হলে কোভিড টেস্ট করিয়ে নেওয়াই ভাল।