কাওসার আহমেদ (১৮) ও তার ছোট বোন সাদিয়া খাতুন (১২)। দুই ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মামার বাড়ি যাচ্ছিলেন হেলেনা বেগম। শনিবার (৭ মে) দুই সন্তান এবং ভাইকে সাথে নিয়ে নাটোর শহরের হরিশপুর বাস টার্মিনাল থেকে একটি বাসে ওঠেন তিনি। এক বছর পর মামাবাড়িতে যাওয়ার আনন্দে মেতে ছিল দুই ভাই-বোন। সে আনন্দ বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। পথে এক দুর্ঘটনায় নিজে অক্ষত থাকলেও চোখের সামনে আদরের দুই সন্তানের প্রাণ যেতে দেখেছেন হেলেনা বেগম। দুই বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে তার দুই সন্তানের। চোখের সামনে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় ছেলে ও মেয়েকে হারিয়ে এখন নির্বাক মা হেলেনা। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় বনপাড়া-ঢাকা মহাসড়কে গাজী অটো রাইসমিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারান সাতজন। তাদের মধ্যে ছয়জন ঘটনাস্থলেই আর একজন হাসপাতালে মারা যান। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। নিহত দুই ভাইবোন হলেন নাটোর সদর উপজেলার বড় হরিশপুরের পাইকোড়দৌল গ্রামের শাজাহান আলীর ১২ বছর বয়সী মেয়ে সাদিয়া পারভিন ও ১৮ বছর বয়সী ছেলে কাওছার আলী। সাদিয়া পড়তেন পাইকোড়দৌল উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে আর কাওছার দিয়ারভিটা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। নিহতদের মামা আব্দুল জলিল বলেন, র্দীঘ এক বছর পর মামা বাড়ি যাওয়ার আনন্দে উৎফুল্ল ছিল দুই ভাইবোন। আমাদের চোখের সামনে তারা মারা গেল। বড় হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গণি ভুঁইয়া জানান, সকালে মায়ের সঙ্গে মামা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বের হয় তারা। এক ঘণ্টা পরই খবর আসে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজনই মারা গেছে। তাদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা আমাদের জানা নেই। ছেলে-মেয়েকে একসঙ্গে হারিয়ে তাদের বাবা-মা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। এলাকাতেও শোকাবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মায়ের চোখের সামনে প্রাণ গেল আদরের ২ সন্তানের
প্রকাশ : May 8, 20227:31 am
