শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন
Menu

মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে দেশের সব বন্দরে সতর্কতা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  May 22, 20227:44 am

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের ডজন খানেক দেশে ভাইরাসজনিত বিরল রোগ মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে দেশের সবগুলো বিমানবন্দরে এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। রোববার (২২ মে) সকালে তিনি বলেন, ‘নতুন কোনো রোগের তথ্য পেলে বন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি একটা রুটিন ওয়ার্ক। সে হিসেবে সবগুলো বন্দরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’ রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এই চিঠিতে বিমানবন্দরের মেডিকেল অফিসারদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কারও মধ্যে উপসর্গ থাকলে বা সন্দেহ হলে তাকে চিহ্নিত করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে বলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘যেহেতু এটা সংক্রামক রোগ, তাই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। প্রাথমিকভাবে মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো রোগী পাওয়া গেলে সেখানে আইসোলেশনে রাখা হবে।’ জানা গেছে, সাধারণত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সর্বপ্রথম বানরের দেহে শনাক্ত হওয়া রোগটি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এর আগে আফ্রিকার বাইরে দেখা যায়নি। এবারই প্রথম ইউরোপ ও আমেরিকায় মাঙ্কিপক্সের রোগী পাওয়ার কথা জানা গেলো। এরই মধ্যে ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেন এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় মাঙ্কিপক্সের রোগী পাওয়ার কথা জানা গেছে।

মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ

মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জোড়া ও মাংসপেশিতে ব্যথা এবং অবসাদ। জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি প্রথমে দেখা দেয় মুখে। পরে তা হাত-পায়ের পাতাসহ দেহের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এসব গুটির জন্য রোগী দেহে খুব চুলকানি অনুভব করেন। পরে গুটি থেকে ক্ষত দেখা দেয়। জলবসন্তের মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে সেই ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়। রোগ দেখা দেওয়ার ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। সংক্রমিত রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে।

মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসা

মাঙ্কিপক্সের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যেকোনো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মতই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায়। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকাও নেই। তবে গুটিবসন্তের ভাইরাসের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের জীবাণুর মিল রয়েছে। ফলে গুটিবসন্তের টিকা নেওয়া থাকলে তা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে। যেহেতু এ রোগ সাধারণভাবে প্রাণঘাতী নয়, তাই এটি নিয়ে উদ্বেগের তেমন কারণ নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।