রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
Menu

মধ্যরাতে টিপুর স্ত্রীকে র‌্যাব অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  March 31, 20222:56 pm

ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার বাদী এবং তার স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলিকে র‌্যাব কার্যালয়ে মধ্য রাতে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলিকে সোমবার রাত ১০টার দিকে টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে তাকে আবার বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ডলি মঙ্গলবার সকালে মুকসুদপুর বার্তাকে বলেন, “কোনো তথ্য আমি জানি কী না? এর আগে সাংবাদিক সম্মেলন করার আগে ডিবি ডেকে নিয়েছিল। যেহেতু আমি তার ওয়াইফ, আমার সঙ্গে কোনো কথা শেয়ার করেছিল কি না, কাউকে সন্দেহ হয় কি না- ইত্যাদি জানতে চায়। তারপরে রাজনৈতিক পরিস্থিতিটা জানতে চেয়েছে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের। এসব নিয়ে কথা হয়েছে আরকি। টিপুর স্ত্রীকে কেন ডেকে নেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দীন বলেন, কিছু বিষয় জানার জন্য আমরা তাকে ডেকেছিলাম।শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকার রাস্তায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অস্ত্রধারীর গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪)। ওই সময় গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। ওই ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ডলি শুক্রবার সকালে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। টিপু প্রায় এক দশক আগে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ৪-৫দিন আগে ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন তার স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় রোববার বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মাদ আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আকতার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আকাশই ‘মূল খুনি’। টিপুকে হত্যার জন্য তাকে ভাড়া করা হয়েছিল। তবে কারা কেন টিপুকে হত্যা করার জন্য খুনি ভাড়া করেছে, সেসব প্রশ্নের উত্তর এখনও পুলিশ দিতে পারেনি। এ পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার রাতে কাউন্সিলর ডলির কয়েকজন রাজনৈতিক সহকর্মী খবর দেন, তাকে ‘নিয়ে’ গেছে র‌্যাব। পরে মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের ডলিদের বাসার সামনে জনা চল্লিশেক নেতা-কর্মীর ভিড় দেখা যায়। বাসার সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা ছিল অনেকগুলো মোটরসাইকেল ও গাড়ি। তাদের কথায় জানা যায়, র‌্যাব আবার ডলিকে বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে গেছে। তবে রাতে আর বাসায় ঢোকার অনুমতি মেলেনি সাংবাদিকদের। একজন আত্মীয় বলেন, ডলি ‘বেশ অসুস্থ’। পা ফুলে যাওয়ার কারণে তিনি ঠিকমত হাঁটতেও পারছেন না। এরপর সকালে ফোন করলে কাউন্সিলর ডলি মুকসুদপুর বার্তাকে বলেন, “আমার দাবি ছিল… কিলার ধরছে। কেউ তো তাকে টাকা দিয়ে ভাড়া করেছে। টিপুর সঙ্গে এ্ কিলারের তো সরাসরি কোনো বিরোধ নাই, দ্বন্দ্ব নাই। এটা ধরছে, তাতে আমি খুশি না। আমার কথা হচ্ছে পরিকল্পনা করছে যারা, যারা এদেরকে ভাড়া করেছে, তাদের ধরতে হবে। আবার পরিকল্পনা যারা করছে, তাদেরও গডফাদার আছে, এরা কারা? এই দুইটা স্তর ধরে দিতে হবে। এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের জঘন্য খুন-খারাবি বন্ধ হবে না। একজন কিলার ধরলেন, তার শাস্তি হল, কিন্তু মাস্টারমাইন্ডরা ধরা পড়ল না। তাতে তো আমার আর আমার বাচ্চাদেরও জানের রিস্ক তৈরি হল। আমি এখন তো নিরাপদে থাকতে পারছি না। এই কথা গুলোই আমি র‌্যাবকে বলেছি। ডলি বলেন, র‌্যাব আমাকে বলেছে, তারা আমাকে আরও আগেই ডাকত। কিন্তু আমার শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা এতদিন ডাকেনি। তারাও চায় টিপু হত্যায় যুক্ত সব স্তরের সবাইকে ধরতে। তারা বলেছে, এই খুনিচক্রের একদম শেকড় পর্যন্ত তারা ধরার চেষ্টা করছে। আর আমি আমার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলেছি তারাও আমাকে কথা দিয়েছে আমার নিরাপত্তার বিষয়টি তারা দেখবে। মাস্টারমাইন্ড বা গডফাদার হিসেবে র‌্যাবের কাছে কারও নাম বলেছেন কি না- এই প্রশ্নে টিপুর স্ত্রী বলেন, “আমার হাজব্যান্ড তো আমাকে এরকম কিছু বলেনি। আমি পলিটিক্যাল কর্নার থেকে যা যা জেনেছি সেটুকুই বলছি। আর আমিত কোন গডফাদারের নাম  শুনিনি। আমি তো তাদের চিনিও না।