রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
Menu

বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট করুন।

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  May 8, 20226:13 am

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ১২ ভাগ অর্থাৎ প্রায় দেড় কোটি পুরুষ-মহিলা নিজের অজান্তে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। আমাদের দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মায়। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই রোগকে প্রতিরোধ করতে। জানাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল প্রত্যেক মা-বাবাই চান তাঁদের সন্তান সুস্থ ও সুন্দরভাবে জন্মলাভ করুক, কিন্তু কারো কারো এ স্বপ্ন ভেঙে যায় জানা-অজানা নানা কারণে। থ্যালাসেমিয়া তেমনি একটি জন্মগত রক্তরোগ, যাতে মা-বাবার স্বপ্ন ভেঙে যায়। যেসব সমাজে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিয়েশাদি বেশি প্রচলিত, সেসব সমাজে থ্যালাসেমিয়ার মতো বংশগত রোগবালাই বেশি। মা-বাবা এ রোগের বাহক হলে তাঁদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে। যারা থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক তাদের কোনো উপসর্গ নেই। এরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। এমনকি জন্মের পরপরই এ রোগটি ধরা পড়ে না। শিশুর বয়স এক বছরের বেশি হলে মা-বাবা লক্ষ করেন শিশুটি ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে শিশুর দুর্বলতা। আর তখনই শিশু বিশেষজ্ঞ রক্ত পরীক্ষা করে শিশুটিকে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশু হিসেবে চিহ্নিত করেন। মা-বাবা জানতে পারেন যে তাঁরা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। আমাদের দেশে থ্যালাসেমিয়া এখন এক নীরব মহামারি, যাতে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের বাঁচিয়ে রাখতে বিশাল রক্তের ভাণ্ডার প্রয়োজন হচ্ছে। আনুষঙ্গিক খরচ বহন করতে গিয়ে আর্থিক দৈন্য ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন লাখো মা-বাবা।প্রতিরোধের উপায়
একটু সচেতন হলেই আমরা এ রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী বা বাচ্চা নেওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশে, যেমন—সাইপ্রাস ১৯৭৩ সালে, বাহরাইন ১৯৮৫, ইরান ২০০৪, সৌদি আরব ২০০৪ এবং সর্বশেষ পাকিস্তান ২০১৩ সালে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর বা বাচ্চা নেওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রীর থ্যালাসেমিয়া আছে কি না তা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে থ্যালাসেমিয়া রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। যে কেউ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হতে পারে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই জানা যায় কেউ থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না। বাবা ও মা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলেই কেবল সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একজন বাহক এবং অপরজন সুস্থ এমন দুজনের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হলে সন্তানদের কোনো সমস্যা হবে না।