মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন
Menu

পটুয়াখালীর দুমকিতে এক সন্তানের জননীকে পুড়িয়ে হত্যা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  May 27, 202211:40 am

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের  উত্তর পাংগাশিয়া গ্রামে ঘুমন্ত অবস্থায় এক নারীকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) মধ্যরাতে নিজ বাড়ির ঘরের বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় তার ওপর কে বা কারা পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত নারীর নাম ইতি আক্তার (২৬)। তিনি এক সন্তানের জননী। তার পরিবারের অভিযোগ, ইতির স্বামী আব্দুল জলিলকে তালাকনামা পাঠানোয় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ইতির পরিবারের দাবি, এক সপ্তাহ আগে স্বামীকে তালাকনামা পাঠান ইতি আক্তার। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত একটায় ঘরের বারান্দায় ঘুমন্ত ইতির ওপর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় স্বামী আব্দুল জলিল। পরিবার আরও জানায়, ইতির আর্তচিৎকারে তার বাবা আব্দুল মান্নান খান ঘুম থেকে উঠে মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ছয়টায় তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুমকি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। ইতির মৃত্যুতে তার বাবার বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম। এই নির্মম লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। ইতি  ছিল তার পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। নিহত ইতির ভাই মোহাম্মদ ফারুক খান জানান, সাত বছর আগে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করার সময় ইতির সাথে পরিচয় হয় জলিলের। প্রেম করে বিয়ে করে তারা। তাদের ঘরে সাড়ে পাঁচ বছরের আজমাইন নামে একটি ছেলে রয়েছে। তিনি জানান, কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না ইতির। নিত্যই তার ওপর চলতো স্বাভাবিক নির্যাতন। অতিষ্ঠ হয়ে তিন মাস আগে বাবার বাড়ি চলে আসে ইতি। দুই সপ্তাহ পূর্বে ১৩ মে স্বামী আব্দুল জলিলকে তালাক দেন ইতি। সপ্তাহ খানেক আগে তালাকনামা ডাকযোগে পাঠানো হয় জলিলের গ্রামের বাড়ি জেলার মিরপুর উপজেলার রামাইপাড়ায়। ইতির ভাই আরও জানান, এতে জলিল ক্ষিপ্ত হয়ে তিনদিন পূর্বে মোবাইলে ইতিকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।  দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। স্বজনদের বক্তব্য ও সুরতহাল রিপোর্টে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলেই মনে হয়েছে। আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে দুইটি পেট্রোলের বোতল জব্দ করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জেলা পিবিআইয়ের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ইতির স্বামী জলিলের মোবাইলে পিবিআই টিমের এক সদস্য ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন এবং স্ত্রীর মৃত্যুর ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান।