ধান ও চালের অবৈধ মজুত বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর মিল মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে কৃষক। গত দুই দিন আগে যে ধান বিক্রি হয়েছে ১৩৫০ টাকায় সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্রি হচ্ছে ১২৫০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি মণ ধানের দাম কমেছে ১০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার অবৈধ মজুতদার ও অনুমোদনহীন ধান-চাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার কারণে যেসব চালকল মালিক মজুত শর্তের অতিরিক্ত ধান কিনেছিল তারা জরিমানার ভয়ে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। আর ধানের দাম বাজারে কম হওয়ার ফলে নওগাঁর পাইকারি চালের বাজারে কেজিতে ২-৩ টাকা দাম কমেছে। তবে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েনি। বাজার আগে যা ছিল এখনও তাই রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, অবৈধ মজুতদার ও অনুমোদনহীন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করায় চালকল মালিকরা জরিমানার ভয়ে ধান কম কিনছেন। আবার অনেক মুজতদাররা বাজারে ধান কিনে মজুত করে রাখলেও তাদের লাইসেন্স নেই। তারাও ধান কেনা বন্ধ করায় বাজারে চিকন জাতের ধান মণ প্রতি ১০০ টাকা কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নওগাঁর মহাদেবপুরের হাটচকগৌরি হাটে আড়তদার ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি মণ কাটারীভোগ ধান বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১২৫০ অথচ গত মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ১৩০০-১৩৫০ টাকা ও জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ১২৫০-১৩০০ টাকায়, সেখানে গত মঙ্গলবার ঐ ধান বিক্রি হয়েছে ১৩৫০ থেকে ১৪০০ টাকা। হাটে আসা কৃষক অলিক চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আজ হাটে ধান বিক্রি করনু ১২০০ টাকা মন। হামরা কি করে খামো, কি করে চলমো কন। সরকার মজুত বিরোধী অভিযান শুরুর করার পর থেকে মিলাররা ধান কিনোচো না। তাই দাম কম। হামরা কৃষক শ্যাশ।’ এ বিষয়ে জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ চকদার বলেন, বড় বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ও কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের অসম প্রতিযোগিতার কারণে ভরা মৌসুমের ধান-চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছিল। তবে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার পর যেসব মিলার মজুত নীতি অনুযায়ী অতিরিক্ত ধান গুদামজাত করেছিল তারা বর্তমানে বাজারে ধান কিনছেন না। ফলে বাজারে পর্যাপ্ত ধানের আমদানি থাকলেও দাম কম। আর এদিকে ধানের দাম কম হওয়ায় পাইকারি বাজারে চালের দামও কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়বে। এদিকে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার বলেন, এখন পর্যন্ত খুচরা চাল বাজারে সরকারের পরিচালনা করা অভিযানের কোনো প্রভাবই পড়েনি। আমরা যে মোকামগুলো থেকে পাইকারী চাল ক্রয় করি সেখানেই বেশি দাম দিয়ে বস্তা কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বেশি দামে খুচরা বাজারে চাল বিক্রি করছি। তবে সারাদেশে যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তাতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কিছুটা হলেও চালের দাম কমতে পারে।
ধানের দাম মণপ্রতি কমেছে ১০০ টাকা কিন্তু খুচনা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি
প্রকাশ : June 3, 202211:03 am
