রমজান আর প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে দেশের মানুষ। তারপর দাবদাহ থেকে সামান্য পরিত্রাণ পেতে গ্রীষ্মের মৌসুমী রসালো ফল তরমুজের চাহিদাও বেড়েছে। ইফতারেও রোজাদাররা তরমুজই পছন্দ করেন। চাহিদাকে পুঁজি করে বাগেরহাট জেলাজুড়ে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ এই তরমুজের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এখন আর তরমুজের স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা। বাগেরহাটের বিভিন্ন তরমুজ খামারীদের ও আড়ৎদারদের কাছ থেকে জানা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে পিস হিসেবে মাঝারি মানের ১০০ তরমুজ ৫ থেকে ৬ হাজার ও বড় সাইজের ১০০ তরমুজ ৭ থেকে ৮ হাজার কিনে থাকেন। তবে, খুচরা বিক্রেতারা জেলাজুড়ে সিন্ডিকেট করে তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি না করে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছে। বুধবার দুপুরে মোংলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছর যে তরমুজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কেনা গেছে, এবার সেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। এবার তরমুজ ব্যবসায়ীরা আগের সব নিয়ম ভঙ্গ করে পিস হিসেবের পরিবর্তে কেজি দরে দরমুজ বিক্রি করছেন। বড় সাইজের একটি তরমুজ ১৫০ টাকার বেশি বিক্রি হওয়ার কথা নয়। বাজারে তরমুজ কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতারা বলেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। বাধ্য হয়েই তাদের বেঁধে দেওয়া দামে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে তুরমুজ কিনতে বাধ্য হলেও প্রশাসনের কোনও নজরদারি নাই। মোংলা বাজারের সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তরমুজ বিক্রেতারা বলেন, ভালো ফলন না হওয়া ও বেশি দামে তরমুজ কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে, পিস হিসেবে কিনে কেন কেজি দরে বিক্রি করছেন সে বিষয়ে তারা কোনো সন্তোষজনক উত্তর দেননি। মোংলা উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুর আলম শেখ বলেন, ব্যবসায়ীদের ওপর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী মহল চাঁদাবাজি করছে। যার ফলে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়াভাবে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের রাম রাজত্ব অব্যাহত রাখছে। এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘প্রথম দিকে কোনও অভিযোগ পাইনি, তবে এখন বিভিন্ন অভিযোগ পাচ্ছি। আজ কালের মধ্যেই তরমুজ সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবো’।
তরমুজের দাম আকাশ ছোঁয়া
প্রকাশ : April 20, 20221:23 pm
