শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
Menu

ঠাকুরগাঁও জেলায় মাদক ব্যবসায়ীর ব্যতিক্রমী দণ্ডাদেশ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  April 12, 202211:40 am

প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছেন মো. আব্দুল্লাহ (৫০) নামে এক ব্যক্তি। প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘মাদক ব্যবসার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমা প্রার্থী। মাদক দেশ ও দশের শত্রু। মাদক পরিহার করন।’ ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মূল ফটকের সামনে এমন ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখে হয়তো অনেকেই থমকে দাঁড়াবেন। আব্দুল্লাহ একজন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি জেলার রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের মৃত মনতাজ আলীর ছেলে। গত রবিবার আব্দুল্লাহর এক ব্যতিক্রমী দণ্ডাদেশ প্রদান করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ গাজী দেলোয়ার হোসেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহর ১৫ সালের একটি মাদক মামলা বিচারাধীন ছিল। প্রথমে আদালত তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেন। পর আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যে, আব্দুল্লাহ একজন গরিব কৃষক ও তার দুই মেয়ে পবিত্র কুরআনের হাফেজ। একজন হেফজ সম্পন্ন করেছেন, অন্যজনের প্রায় শেষের দিকে। মাদক ব্যবসার জন্য তিনি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমা-প্রার্থী। পরে আদালত পূর্বের রায় পরিবর্তন করে আব্দুল্লাহকে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ১০ দিন আদালত চত্বরে ‘মাদক ব্যবসার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমা-প্রার্থী’ ও ‘মাদক দেশ ও দেশের শত্রু মাদক পরিহার করুন’ এই লেখা সম্বলিত একটি ব্যানার প্রদর্শনের ভিন্নরকম এই আদেশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পরই ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মূল ফটকের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আব্দুল্লাহ। প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, ‘মাদক ব্যবসার জন্যে আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। মাদক দেশ ও দশের শত্রু। মাদক পরিহার করুন।’আসামি পক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন জানান, আসামির দুটি মেয়ে আছে। একজন কোরআন খতম দিয়েছে ও অপরজন দেবেন। এর আগে তার নামে কোনো প্রকার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এই আসামি তার এই কাজে অনুতপ্ত এবং পরিবারে সে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি। তাই সামগ্রিক বিবেচনায় বিজ্ঞ বিচারক এই রায় দেন। ২০১৫ সাল থেকে মাদকের এ মামলাটি বিচারাধীন ছিল।