মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
Menu

চীনে আবার লকডাউন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  March 17, 20227:50 pm

করোনার সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ায় চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে আবার লকডাউন জারি করা হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি চীনে তাদের ব্যবসা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিগুলো হলো জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক টয়োটা, জার্মান ভক্সওয়াগন ও আইফোন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফক্সকন।

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ শেনঝেনে টানা পাঁচ দিন লকডাউন থাকার পর সেখানকার বাস ও রেলপথের সব সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের সীমান্তবর্তী শহর ল্যাংফাং ও গুয়াংদংয়ের দক্ষিণ প্রদেশ দংগুয়ানে অমিক্রনের দ্রুত সংক্রমণের কারণে জরুরি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। করোনা সংক্রমণের দুই বছরের মধ্যে মঙ্গলবার চীনের জিলিন প্রদেশ ও প্রযুক্তির কেন্দ্রস্থল শেনঝেনে ৫ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার অধিকাংশই জিলিন প্রদেশের। ফলে জিলিন প্রদেশে বাসিন্দাদের প্রদেশ ত্যাগ ও চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। চীনের উত্তর পূর্ব প্রদেশের ২ কোটি ৪ লাখ মানুষকে গত সোমবার কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে উহানে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর এবারই প্রথম বড় অঞ্চলজুড়ে লকডাউন ও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাপলের আইফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফক্সকন গত সোমবার শেনঝেনে তাদের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। চীনে ফক্সকনের বেশ কয়েকটি উৎপাদন কারখানা আছে, যাদের সম্ভাব্য প্রভাব কমিয়ে আনতে প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন লাইনে সামঞ্জস্য করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে জেংহু প্রদেশে বিধিনিষেধ আরোপিত না হওয়ায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ আইফোন প্রস্তুতকারী কারখানাটি এখনো চালু আছে। জিলিন প্রদেশের চাংচুন শহরে টয়োটা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলেও কবে নাগাদ সেটি চালু হতে পারে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়নি। সরবরাহের কাজে প্রভাব ও কর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই কারখানা বন্ধের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে জাপানের গাড়ি নির্মাণকারী এই কোম্পানি। টয়োটার মতো জার্মানির গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগনও চাংচুনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার কারখানাটি পুনরায় খোলার আশা করা হচ্ছে। এদিকে লকডাউনের জেরে মঙ্গলবার চীনের শেয়ারসূচক সাংহাই ও হাংসেন ৫ শতাংশ পড়েছে। আর চীনের বেশ কিছু বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ৬ শতাংশ সূচক হারিয়েছে। সংক্রমিত অঞ্চলগুলোতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। জরুরি সেবা সরবরাহ ছাড়া কর্মীদের অন্য সব কাজ ঘরে বসে করার জন্য বলা হয়েছে। তবে জনমনে আশঙ্কা, লকডাউনে জরুরি সরবরাহ সেবা বিঘ্নিত হবে।
তবে কারখানাগুলো এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। সিঙ্গাপুর ডিবিএস ব্যাংকের সিনিয়র ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ইয়েং চেং লিং বিবিসিকে বলেন, এ ধরনের লকডাউন এর আগেও হয়েছে এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর পুনরায় কার্যক্রম চালু হয়েছে।

সরবরাহকারীদের জন্য শেনঝেন প্রদেশ গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে সাংহাই প্রদেশ ও তার আশপাশের নোটবুক, সার্ভার ও স্মার্ট ডিভাইস উৎপাদনকেন্দ্রে লকডাউন সম্প্রসারিত করা হলে তা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।