সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
Menu

গ্রেফতার হলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ :  November 22, 20217:28 am

পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী ও ভারতের তৃণমূল যুবনেতা সায়নী ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে পূর্ব আগরতলা থানায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গাড়ি ঠেলে এক ব্যক্তিকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, গ্রেফতার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। অভিযোগ, নির্বাচনী প্রচারের পর ফেরার পথে চৌমুহনীতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভায় সায়নী ‘খেলা বেহে’ স্লোগান দেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কড়া মন্তব্যও করেন। তার গাড়ি তাদের একজনকে ধাক্কা দেয় বলেও অভিযোগ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে রাতেই সায়নীকে গ্রেপ্তার করতে পলো হোটেলে যায় পুলিশ। ছিলেন সায়নী-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু রাতেই পুলিশের কাছে আইনি নোটিশ দাবি করেন তৃণমূল নেতারা। কুণাল ঘোষ সায়নীকে থানায় নিয়ে যেতে বাধা দেন।

রবিবার সকালে আগরতলা পূর্ব থানায় যান সায়নী। তার সঙ্গে ছিলেন কুণাল ঘোষ ও সুস্মিতা দেব। তাকে সারাদিন থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিকেলে আগরতলা পূর্ব থানার পুলিশ সায়নী ঘোষকে গ্রেফতার করে।
অনেকক্ষেত্রেই যুব তৃণমূল ও তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছে। অভিনেত্রী বলেছিলেন,আমাকে আগে সমস্যাগুলো বুঝতে হবে। একটা পরিবারে বসবাস করলে একটু বচসা, একটু মনোমালিন্য় হতেই পারে। অনেকসময় যুবদের মনে হয় মূল দল একটু দূরে সরে গিয়েছে। আবার হয়ত মূল দলের মনে হয় যুবরা একটু বেশিই জড়িয়ে পড়ছে সমস্ত বিষয়ে। সমস্ত বিষয়টাই ব্যালেন্সের। আমি সেটা বিশ্বাস করি। আমি যখন প্রার্থী হিসাবে আসানসোলে গিয়েছিলাম তখন আমি তৃণমূলের মূল দল ও যুব দলের সঙ্গে কাজ করেছি। আশা করছি গোটা রাজ্য জুড়েই তাই হবে।’

সায়নীকে নতুন দায়িত্ব নিয়ে কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সায়নী বলছেন, ‘দিদি বললেন, এটা অনেক বড় দায়িত্ব। খুব মন প্রাণ ঢেলে কাজ করতে হবে। আর আমি অনেক আগেই বলেছি, আমি এখানে শুধুমাত্র চেয়ার বা ক্ষমতার লোভে আসিনি। অভিনেত্রী.. ভোটে লড়লাম। জিতলে ৪ বছর পরে এলাম.. হেরে গেলে কখনও এলাম না, এই ধারণাটাই ভাঙতে হবে। আমার দল ইতিমধ্যেই বুঝেছে আমি রাজনীতি নিয়ে কতটা সিরিয়াস, এবার মানুষের মধ্যে সেই বিশ্বাসটাই ছড়িয়ে দিতে হবে। আমার খুব মনে হয়, যুবসমাজ আমার জায়গা। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অনেক মানুষকে কাছাকাছি আনতে হবে। অনেকরকম অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে রয়েছে আমাদের জন্য। আমি তো আজকে থেকেই কাজ শুরু করে দিতে চাই।’

কেবল সায়নী বা অভিষেক নয়, এদিন রদবদল হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদেও। এসেছে অনেক নতুন মুখও।
সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী হচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। কৃষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হতে চলেছেন পূর্ণেন্দু বসু। রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হলেন কুণাল ঘোষ। পাশাপাশি, বঙ্গ জননী বাহিনীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মালা রায়কে। তৃণমূলের কালচারাল সেলের প্রধান হচ্ছেন রাজ চক্রবর্তী।
বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূলে এক ব্যক্তি এক পদ নীতি কার্যকর হয়েছে। বাংলার বাইরেও সংগঠন শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করবে তৃণমূল। বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করবেন সাংসদরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় নেতৃত্বকে কুর্নিশ জানিয়েছে দল।’এছাড়া, ৮টি জেলার রাজ্য সভাপতির রদবদল ঘটেছে বলে সূত্রের খবর।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের নেতাদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতৃত্বকে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে কড়া বার্তা দেন। মমতা বলেন, ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে হবে। গরু-কয়লা কেলেঙ্কারিতে যেন কেউ না জড়িয়ে পড়েন। কথায় কথায় লালবাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার নয়।’

বিধানসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পেয়েছিলো তৃণমূল। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দলকে আরও সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রক্ষায় কোনওমতেই আপস করা হবে না কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

ভোটের ফলপ্রকাশের একমাস পর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মেগা বৈঠক হয়েছিল তৃণমূল ভবনে। ওয়ার্কিং কমিটির পর, কোর কমিটির বৈঠকে দলীয় নেতা-কর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী।