দীর্ঘ ৬২ বছর পর আলোর মুখ দেখেছেন রাঙামাটির ১৩টি পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা। এতে আনন্দের উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে পাহাড়বাসির মধ্যে। বিদ্যুৎ পেয়ে ঘরে বসে কর্মসংস্থান চাঙ্গা করেছেন অনেকেই। তবে আনন্দের পাশাপাশি ছিল ক্ষোভ। দীর্ঘ বছর ধরে বিদ্যুৎ বঞ্চিত থাকায় পিছিয়ে ছিল এসব গ্রামবাসির জীবনমান। আধুনিকতা ছোঁয়া লাগেনি শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি গ্রামে। স্থানীয়রা বলছেন, এ বিদ্যুতের সুবিধা আরও কয়েক বছর আগে পেলে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসতো এসব পাহাড়ি গ্রাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহর থেকে মাত্র ৩০-৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সদর উপজেলার জীবতলী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের বড়াদম, কামিলাছড়ি, মানিকছড়িসহ মোটি ১৩টি গ্রাম ছিল বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত। গ্রামবাসি দূর থেকে বিদ্যুতের আলোয় উজ্জ্বল শহর দেখলেও নিজেরাই ছিল অন্ধকারে। তাদের জীবন চলতো কিংবা মোবাতির আলোয়। এতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এসব গামের শিক্ষার্থীদের জীবনমান। সুবিধা বঞ্চিত ছিল তথ্য প্রযুক্তিসহ আধুনিকতা থেকে। রাঙামাটি সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা বলেন, এতোদিন আমরা অনেকটা বাতির নিচে অন্ধকারে ছিলাম। শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামের মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা পাইনি। এটা ভাবা যায়, দীর্ঘ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। এখন গ্রামের মানুষ খুশি। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে রাঙামাটি সদর উপজেলার জীবতলী ইউনিয়নবাসি আলোর মুখ দেখেছে। বিদ্যুৎ আসার পর এই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে আগ্রসর হচ্ছে। বড়াদম সুরবালা স্মৃতি বিদ্যা পীঠ কম্পিউটার প্রশিক্ষক মেওয়াই চিং মারমা বলেন, বিদ্যুৎ আসার ফলে আমরা অনেক খুশি। প্রায় দুই মাস হলো এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ক্লাস কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি, শিক্ষার্থীরা এতে খুব আনন্দিত। মগবান ইউনিয়নের বড়াদমের আওলাদ বাজার এলাকার বাসিন্দা মানু চিং মারমা বলেন, আমাদের মোবাইল ছিল কিন্তু মোবাইল চার্জ করতে পারতাম না। টিভি দেখিনি দীর্ঘ বছর, বলতে গেলে আধুনিকতা কী কিছুই বুঝতাম না। তবে বিদ্যুৎ আসার পর মুহূর্তে বদলে গেছে সব। তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী উজ্জল বড়ুয়া বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হয় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। ৫৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের অধীনে ১৬টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ, বিভিন্ন কেভির ১ হাজার ৯শ ৫০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ হয়েছে।
অবশেষে আলো জ্বলছে রাঙামাটির ১৩টি পাহাড়ি গ্রামে
প্রকাশ : November 11, 20221:22 pm
